জেনে রাখুন নিমিষেই ছারপোকা দূর করার উপায়!
খুব ছোট একটি প্রাণী ছারপোকা। কিন্তু এই ছোট প্রাণীটিই খুব সহজে রাতের আরামের ঘুম হারাম করে দিতে পারে। বিছানা, তোষক, বালিশ, সোফা, লেপ-কম্বল, জামাকাপড় ইত্যাদি আরো বিভিন্ন স্থানে এই ছারপোকার বসবাস।
বাড়িতে একবার ছারপোকা দেখা গেলে দমন করা বেশ কষ্টকর হয়ে পড়ে। অনেকে এর থেকে পরিত্রাণ পেতে বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার করেন। কিন্তু তবুও ছারপোকা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় না। তবে খুব সহজ উপায়ে আপনি এই ছারপোকার হাত থেকে রক্ষা পেয়ে যাবেন। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক সেই উপায়গুলো-
১. প্রাথমিকভাবে অল্প ছারপোকা বা ওরসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে বিছানা বা তোষকে ন্যাপথালিন এর গুটি দিন। বিছানার তোষকের মাথার উপর এবং পায়ের নিচের দুপাশে ১-১-১ ফরম্যাটে দুই পাশে কমপক্ষে ৬টি ন্যাপথালিনের গুটি দিন। একাধিক তোষক বিছানো থাকলে আরো বেশি দিন। কিন্তু ফরম্যাট একটাই (১-১-১) ন্যাপথালিন এর ব্যাবহারে আপনি অল্প ছারপোকার হাত থেকে রক্ষা পাবেন। পাশাপাশি আপনাকে ছারপোকা এখনো আক্রমন করেনি, কিন্তু আপনার প্রতিবেশী বা পাশের রুমে আক্রমন করেছে,এমতাবস্থায় আপনি ন্যাপথালিন ব্যাবহার করে ভালো ফলাফল পাবেন। কারণ ন্যাপথালিন এর গন্ধে ছারপোকা আপনার বিছানায় বাসা করতে পারবেনা।
২. ছারপোকা বা ওরসের আক্রমণ যদি অনেক বেশি হয় তবে, আপনাকে ছারপোকার ট্যাবলেট দিতে হবে। যার নাম Aluminium Phosphide, যেসকল দোকানে বীজ, সার, কীটনাশক বিক্রি করে সেইসকল দোকানে ছারপোকার ট্যাবলেট পাওয়া যায়। প্রতিটি ট্যাবলেটের মূল্য সর্বোচ্চ ৮-১০ টাকা। প্রতি বক্সের মূল্য ২৬০-২৮০ টাকা। একটি কৌটায় ৩০টি ট্যাবলেট থাকে। চাইলে পিস হিসেবেও কিনতে পারেন।
একটি রুমে সাধারনত ৫-৮ টি ট্যাবলেট দিন। রুমের মেঝেতে পত্রিকা বা কাগজ বিছিয়ে রুমের মেঝেতে বিভিন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ট্যাবলেট ফেলে রেখে দিন। আর এই ট্যাবলেট দেয়ার পর রুমের দরজা-জানালা বন্ধ করে ২-৩ দিনের জন্য অন্য কোথাও গিয়ে বেড়িয়ে আসুন। কারণ ট্যাবলেটের গ্যাস এতোটাই বিষাক্ত যে, আপনি এই ট্যাবলেট দেয়ার পর কিছুতেই রুমে থাকতে পারবেন না। আর এই ট্যাবলেট বাতাসের সংস্পর্শে আসার ৫-১০ মিনিটের মধ্যে ফেটে যায়।
২-৩ দিন পর রুমে এসে, দরজা জানালা খুলে দিলে, তখন আর গন্ধ পাবেন না। দেখবেন ট্যাবলেট সব ছাই হয়ে পড়ে আছে। আর ছারপোকা সব যে যেখানে ছিল সেখানেই মরে আছে। গ্যাসের তীব্রতায় ছারপোকা মারা যায়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে ছারপোকা বা উরস বা ওরস যাই বলিনা কেন, এদের দমনে সর্বোচ্চ কার্যকরী পদ্ধতি এই ছারপোকার ট্যাবলেট।
৩. রুমে যখন ছারপোকা আক্রমণ করবে, তখন তারা যে শুধুমাত্র বিছানায় সীমাবদ্ধ থাকবে তা কিন্তু নয়। তারা টাং, কাপড়ের আলমারি সহ যেখানে তন্তু বা সুতির কিছু থাকে, সেখানে আক্রমণ করবে। তাই সেইসকল স্থানে ন্যাপথালিন এর গুটি ফেলে রাখুন। মনে রাখবেন, যেখানে ন্যাপথালিন এর গুটি থাকবে, সেখানে ছারপোকা থাকতে পারবেনা।
আরেকটি মজার বিষয় হলো, ছারপোকার ট্যাবলেট যে কক্ষে ব্যবহার করবেন, সেই কক্ষে থাকা সকল তেলাপোকা, ইঁদুর সেই গ্যাসের তীব্রতায় মারা যাবে। তাই এক ঢিলে তিন পাখি মারার মতো অবস্থা হবে। আর ট্যাবলেট ব্যবহারের পর অবশ্যই বিছানার তোষক রোদে দিতে ভুলবেন না।
ছারপোকা ৩০-৩৫ ডিগ্রির অধিক তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না। যে রুমে ভেজা জামাকাপড় থাকে, সাধারনত সেইসকল রুমে ছারপোকা বেশি বাসা বাধে। তাই অন্তত প্রতি ২ মাস অন্তর অন্তর তোষক রোদে দিন। রুমে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যাবস্থা রাখুন।